অক্ষয়কুমার দত্ত

অক্ষয়কুমার দত্ত : উনবিংশ শতাব্দীর বাংলার নবজাগরণ যুগের অন্যতম সাহিত্য সাধক, অক্ষয়কুমার দত্ত তত্ত্ববােধিনী সভার সভ্য এবং কিছুদিন এই সভার সহ-সম্পাদক ছিলেন। ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দে তিনি তত্ত্বােধিনী পাঠশালার শিক্ষকের পদে নিযুক্ত হন। ১৮৪১ খ্রিস্টাব্দে তত্ত্ববােধিনী সভা থেকে তাঁর রচিত বাংলায় ভূগােল প্রকাশিত হয়।

আগস্ট ১৬, ১৮৪৩ তারিখে তার সম্পাদনায় ব্রাহ্মসমাজ ও তত্ত্ববােধিনী সভার মুখপত্র তত্ত্ববােধিনী পত্রিকা আত্মপ্রকাশ করে। রচনাসম্ভারের ঐশ্বর্য ও পরিচালনার গুণে পত্রিকাটি শ্রেষ্ঠ বাংলা সাময়িকপত্রে পরিণত হয়। সচিত্র প্রবন্ধের পাশাপাশি পত্রিকাটিতে তত্ত্ববিদ্যা, সাহিত্য, দর্শন, ইতিহাস, পুরাতত্ত্ব, বিজ্ঞান, ভূগােল প্রভৃতি নানা-বিষয়ক প্রবন্ধ প্রকাশিত হত। বৈজ্ঞানিক সত্যেন্দ্রনাথ বসু বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে অক্ষয়কুমার দত্তের অবদান সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন:

“শীঘ্রই এ দেশের শিক্ষাবিদেরা জ্ঞান প্রচারের কাজে প্রবৃত্ত হলেন। ঈশ্বরচন্দ্রের কাছ থেকেআমরা পেলাম সংস্কৃত শিক্ষার বই,

অক্ষয়কুমার সৃষ্টির লীলাবৈচিত্র্য প্রকাশ করে সমৃদ্ধ করলেন মাতৃভাষাকে এবং কয়েক বছর পরেই দেখা গেল, প্রায় সকল

বিষয়ের উপরেই বাংলা ভাষায় বই পাওয়া যাচ্ছে। ভারতবর্ষীয় উপাসক-সম্প্রদায় নামক গবেষণা গ্রন্থটি তার শ্রেষ্ঠ কীর্তি (প্রথম ভাগ ১৮৭০, দ্বিতীয় ভাগ ১৮৮৩)। গ্রন্থখানির সুদীর্ঘউপক্রমণিকায় তিনি আর্যভাষা ও সাহিত্যের প্রধান শাখাত্রয় (ইন্দো-ইউরােপীয়, ইন্দো-ইরানীয় এবং বৈদিক ও সংস্কৃত) সম্বন্ধে গভীর আলােচনা করেন।

তাঁর রচিত কয়েকটি উল্লেখযােগ্য গ্রন্থ হল : ভূগােল (১৮৪১), বাহ্যবস্তুর সহিত মানব প্রকৃতির সম্বন্ধ বিচার (১ম ভাগ ১৮৫২, ২য় ভাগ ১৮৫৪), পদার্থবিদ্যা (১৮৫৬)।

 

Leave a Comment