কবি অশোকবিজয় রাহা (Ashok Bijoy Raha) একজন জনপ্রিয় কবি ও প্রাবন্ধিক। তিনি অধুনা বাংলাদেশের শ্রীহট্টের ঢাকা দক্ষিণ গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ছাত্রাবস্থা থেকেই তাঁর কবিতা লেখা শুরু হয় |
অশোকবিজয় রাহা (Ashok Bijoy Raha) এর সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ
অশোকবিজয় রাহা (Ashok Bijoy Raha) ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের শ্রীহট্টে অশোকবিজয় রাহার জন্ম হয়। কবি ও প্রাবন্ধিক অশোকবিজয় রাহার বেশিরভাগ কবিতারই বিষয়বস্তু হল নদী, পাহাড় ও অরণ্যপ্রকৃতি। তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল ভানুমতীর মাঠ, রুদ্রবসন্ত, ডিহংনদীর বাঁকে, জলডম্বুর পাহাড়, রক্তসন্ধ্যা, উড়ো চিঠির ঝাক। ১৯৯০ সালে তাঁর মৃত্যু হয়।
অশোকবিজয় রাহা (Ashok Bijoy Raha) এর ভাষণ
এই শ্রদ্ধেয় কবি 1966 সালে বিশ্বভারতীর প্রতিনিধি হিসাবে সোভিয়েট ল্যাণ্ড নেহেরু অ্যাওয়ার্ড কমিটির আমন্ত্রণে রাশিয়ায় গমন করে রবীন্দ্রনাথ ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে ভাষণ প্রদান করেন।
অশোকবিজয় রাহা (Ashok Bijoy Raha) এর জন্ম পরিচয়ঃ
অশোকবিজয় রাহা (Ashok Bijoy Raha) শ্রীহট্ট জেলার অন্তর্গত ঢাকা দক্ষিণ গ্রামে ভুমিষ্ঠ হন। তাঁর পিতার নাম বঙ্কবিহারী রাহা, পেশায় ইনি ছিলেন কাছাড়ের চা বাগানের কর্মী এবং মাতার নাম হল ব্রহ্মময়ী দেবী। পিতা চা বাগানের কর্মী ছিলেন বলে এই খ্যাতনামা কবির শৈশবকাল কাছাড়ে আদিম বনানী পরিবেশে অতিবাহিত হয়।
অশোকবিজয় রাহা (Ashok Bijoy Raha) এর পড়াশোনা
অশোকবিজয় রাহা (Ashok Bijoy Raha) কৈশোরে কাকার নিকটে শ্রীহট্ট শহরে আগমন করে এই শহরেরই মধ্যস্থিত ইংরেজি বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এই শহরের মধ্যস্থিত মুরারিচাঁদ কলেজ থেকে আই. এ., কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে 1931 সালে অনার্সসহ বি. এ. এবং 1947 সালে বাংলা সাহিত্যে এম. এ. পাশ করেন।
অশোকবিজয় রাহা (Ashok Bijoy Raha) এর কর্মজীবন
অশোকবিজয় রাহা (Ashok Bijoy Raha) 1932 সাল থেকে 1951 সাল পর্যন্ত শ্রীহট্ট এবং করিমগঞ্জের একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা ও অধ্যাপনা করে অবশেষে 1951 সালে বাংলার অধ্যাপক হিসাবে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। দীর্ঘ চব্বিশ বছর বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্র – অধ্যাপকের দায়িত্ব পালন করার পর 1974 সালে কর্মজীবন থেকে অবসর গ্রহন করে শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লীতে নিজের তৈরী” সুরাহা” নামক বাসভবনে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বসবাস করছেন। এইস্থানেই কবির দেহাবসান হয়।
অশোকবিজয় রাহা (Ashok Bijoy Raha) কব্যরচনা সমূহ
অশোকবিজয় রাহা (Ashok Bijoy Raha) কিশোর বয়সেই কাব্যরচনা আরম্ভ করেন, তার রচিত প্রথম কবিতা শ্রীহট্ট থেকে প্রকাশিত” কমলা” পত্রিকায় মুদ্রিত হয়। এই শ্রদ্ধেয় কবির রচিত দুইটি কাব্যসংকলন” ডিহাং নদীর বাঁকে” এবং” রুদ্রবসন্ত” শ্রীহট্ট থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় 1941 সালে প্রকাশিত হলে কলকাতার কাব্যরসিক সমাজ বিস্মিত ও চমকিত হয়। 1942 সালে কবি বুদ্ধদেব বসু তার “এক পয়সার সিরিজে” এই শ্রদ্ধেয় কবির দ্বারা রচিত” ভানুমতীর মাঠ” প্রকাশ করে এই কবিকে একবারে প্রথম সারির কবি হিসাবে অভিনন্দিত করেন। এই প্রথিতযশা কবি দশটি কাব্যগ্রন্থ রচনা করেছেন। সেই কাব্যগ্রন্থগুলির নাম হল — ডিহাং নদীর বাঁকে (1941), রুদ্রবসন্ত (1941), ভানুমতীর মাঠ (1942), জল – ডম্বরু পাহাড় (1945), রক্তসন্ধ্যা (1945), শেষচুড়া (1945), উড়োচিঠির ঝাঁক (1951), যেথা ঐ চৈত্রের শালবন (1961), ঘন্টা বাজে : পর্দা সরে যায় (1981) এবং পৌষফসল (1983)। জীবনানন্দের জগৎ, রবীন্দ্রনাথের জীবনদেবতা, গীতিকাব্যে রবীন্দ্রপ্রতিভার বৈশিষ্ট্য প্রভৃতি এই প্রথিতযশা কবির উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধ। এই মহামান্য কবির রচিত” বাণীশিল্পী অবনীন্দ্রনাথ” একটি বিশিষ্ট গ্রন্থ। এই মহামান্য কবি তার কাব্যগুলিতে নদী, পাহাড়, অরন্য ও প্রকৃতির অপরূপ শোভারাশির বর্ণাঢ্য চিত্র অঙ্কন করেছেন। অভিনব রূপকল্প নির্মাণে বাংলা সাহিত্যজগতে এই মহামান্য কবির সমকক্ষ কবি খুব একটা চোখে পড়ে না।