চারুচন্দ্র ভট্টাচার্য (১৮৮৩-১৯৬১): সহজ, সরল, হৃদয়গ্রাহী বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানভিত্তিক রচনার অন্যতম স্রষ্টা রূপে নন্দিত। চব্বিশ পরগনার হরিনাভিতে তার জন্ম হয়। পিতা বসন্তকুমার চট্টোপাধ্যায়। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় এম. এ. পাশ করে (১৯০৫) প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপনা করেন (১৯০৫-১৯৪০)। আচার্য জগদীশচন্দ্র বসুকে তিনি শিক্ষক হিসেবে লাভ করেন।
তার খ্যাতনামা ছাত্রদের মধ্যে রয়েছেন সত্যেন্দ্রনাথ বসু, মেঘনাদ সাহা, প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ এবং শিশিরকুমার মিত্র। রবীন্দ্রনাথের বাংলা রচনা সম্পদের সংগ্রহ গ্রন্থ ‘রবীন্দ্র রচনাবলী’র প্রকাশনা ছাড়াও বিশ্বভারতীর গ্রন্থন বিভাগ থেকে ‘বিশ্ববিদ্যাসংগ্রহ’ গ্রন্থমালা প্রকাশে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের কাহিনী’, ‘নব্যবিজ্ঞান’, ‘বাঙালির খাদ্য”, “বিশ্বের উপাদান’, “তড়িতের অভ্যুত্থান’, ‘ব্যাধির পরাজয়, ‘পদার্থবিদ্যার নবযুগ প্রভৃতি তার লেখা বিখ্যাত গ্রন্থ। বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদের পক্ষ থেকে তিনি বাংলায় বিজ্ঞান প্রচার প্রচেষ্টার সূচনাপর্বে বিজ্ঞান প্রবেশ ও ‘পদার্থবিদ্যা”নামক পুস্তক প্রণয়ন করেন। জগদীশচন্দ্র বসুর বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে পরিচিত করানাের গুরুদায়িত্ব নানান প্রবন্ধ রচনার মধ্যে দিয়ে তিনি পালন করেন। বিজ্ঞানভিত্তিক রচনায় নিজেকে নিয়ােজিত রাখলেও চারুচন্দ্র ভট্টাচার্য কবিস্মরণে’ নামক স্মৃতিচারণ গ্রন্থে,বঙ্গ রঙ্গমস্থের বিবরণ সম্বলিত অথনটঘটিত’ রচনার মধ্যে দিয়ে তার সাংস্কৃতিক মননের পরিচয় দিয়েছেন। ‘ভাণ্ডার’ ও ‘বসুধারা পত্রিকার সম্পাদনাতেও তাঁর সবিশেষ ভূমিকা ছিল। বিজ্ঞান পরিষদে তাঁর প্রদত্ত রাজশেখর স্মৃতি বস্তা পরমাণু নিউক্লিয়াস বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান রচনার অন্যতম মূল্যবান দলিল হিসেবে পরিগণিত।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ( চারুচন্দ্র ভট্টাচার্য)
জন্মঃ ২৯ জুন ১৮৮৩ হরিনাভি, দক্ষিণ ২৪ পরগণা , বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, বৃটিশ ভারত
মৃত্যুঃ ২৬ আগস্ট ১৯৬১ (বয়স ৭৮)
সমাধিঃ কলকাতা , শান্তিনিকেতন
অন্যান্য নামঃ চারুচন্দ্র ভট্টাচার্য
পেশাঃ লেখক ও অধ্যাপক
পিতা-মাতা বসন্ত কুমার ভট্টাচার্য (পিতা),
মাতাঃ মেনকা দেবী (মাতা)