ফটোগ্রাফি কবে থেকে কোথায় শুরু হয়েছিল এ নিয়ে রয়েছে অনেক মতভেদ। কেউ বলেছেন চীনের একজন বিজ্ঞানী ছোট ছিদ্রের মধ্য দিয়ে আলোক প্রক্ষেপণ দেখে প্রথম ফটোগ্রাফির কথা ভেবেছিলেন। আবার অন্যের মতে ফ্রান্সে প্রথম ফটোগ্রাফি আবিষ্কার হয়েছিল। ফটোগ্রাফির ইতিহাস নিয়ে লিখেছেন মোস্তাক চৌধুরী
১৮২২ খ্রিস্টাব্দে ফটোগ্রাফির মূল কাজ শুরু হয় এই সময়কাল থেকে।
১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম পূর্ণস্থায়ী ছবি তোলেন ফ্রান্সের জোসেফ নাইসফোর নিপসে হেলিওগ্রাফির মাধ্যমে। হেলিওগ্রাফি হচ্ছে সূর্য আলোর সাহায্যে আসা ছায়াকে সাদা-কালো হিসেবে আলোক সংবেদনশীল কাগজে স্থায়ীভাবে ধারণ করা।

প্রযুক্তিগত খুঁটিনাটি
ক্যামেরা হল “ইমেজ-ফর্মিং ডেভাইস” বা ছবি তোলার যন্ত্র এবং ফটোগ্রাফিক ফিল্ম বা একটি সিলিকন ইলেকট্রনিক ইমেজ সেন্সর হল “সেন্সিং মিডিয়াম” বা ছবি ধরে রাখার মাধ্যম। রেকর্ড করার মাধ্যমটি হল যথাক্রমে ফিল্ম বা ডিজিট্যাল ইলেকট্রনিক বা ম্যাগনেটিক মেমরি।
ফটোগ্রাফার ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণ করেন। লেন্সের মাধ্যমে আলোক রেকর্ডিং উপকরণের (যেমন ফিল্ম) উপর যথাযথ পরিমাণ আলো ফেলে “ল্যাটেন্ট ইমেজ” (ফিল্মে) বা আরএডব্লিউ ফাইল (ডিজিট্যাল ক্যামেরায়) প্রস্তুত করা হয়। যেগুলি সঠিক প্রসেসিং-এর পরে ব্যবহারযোগ্য ছবিতে পরিণত হয়। ডিজিট্যাল ক্যামেরা চার্জ-কাপলড ডেভাইস (সিসিডি) বা কমপ্লিমেন্টারি মেটাল-অক্সাইড-সেমিকনডাকটর (সিএমওএস) প্রযুক্তি জাতীয় আলোক-সংবেদনশীল ইলেকট্রনিক্স-ভিত্তিক এক ধরনের ইলেকট্রনিক ইমেজ সেন্সর ব্যবহার করে। তার ফলে ডিজিট্যাল ইমেজ বৈদ্যুতিক পদ্ধতিতে সঞ্চিত হয়। কিন্তু তাকে কাগজ বা ফিল্মেও ধরে রাখা যায়।
ক্যামেরা (বা ‘ক্যামেরা অবস্ক্যুরা’) হল একটি ডার্করুম বা চেম্বার। এর মধ্যে যেটুকু আলো ছবি তৈরি করে সেটুকু বাদ দিয়ে অন্য আলো যথাসম্ভব বাদ দেওয়া হয়। অবশ্য যে বস্তুটির ফটোগ্রাফ নেওয়া হচ্ছে, সেটির উপর আলো পড়া জরুরি। ক্যামেরা ছোটো থেকে অতি বড়ো সব রকমই হতে পারে। যে ঘরে ক্যামেরা সেই ঘরটি অন্ধকারে রেখে অন্য একটি ঘরে যথাযথ আলোর ব্যবস্থা করে বস্তুর ছবি তোলা যায়। বড়ো ফিল্ম নেগেটিভ ব্যবহার করে ফ্ল্যাট কপির রিপ্রোডাকশন ফটোগ্রাফি করার সময় এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় (প্রসেস ক্যামেরা দেখুন)।
মুভি ক্যামেরা হল একধরনের ফটোগ্রাফিক ক্যামেরা যা খুব দ্রুত ফিল্মের স্ট্রিপের উপর ধারাবাহিক ফটোগ্রাফ তুলে যায়। স্টিল ক্যামেরায় একেবারে একটিই ফটো তোলা যায়। কিন্তু মুভি ক্যামেরা পরপর ছবি তুলে যায়। প্রতিটি ছবিকে বলে ফ্রেম। একটি ইন্টারমিটেন্ট মেকানিজম দ্বারা একটি করা হয়। ফ্রেমগুলি পরে একটি মুভি প্রোজেক্টরে নির্দিষ্ট গতিতে চালানো হয়। এই গতিকে বলে “ফ্রেম রেট” (এক সেকেন্ডে প্রদর্শিত ফ্রেমের সংখ্যা)। দেখার সময়, একজন ব্যক্তির চোখ ও মস্তিষ্কে প্রতিটি আলাদা ছবি একসঙ্গে মিশে গতির দৃষ্টিবিভ্রম সৃষ্টি করে।