ফটোগ্রাফি হাতে খড়ি একটি বিগিনারদের গাইড | Photography Guide

Last updated on January 27th, 2021 at 05:36 pm

বিগিনারদের জন্যে ফটোগ্রাফি: একটি সূচনামূলক গাইড | A Beginner’s Guide to Photography, ফটোগ্রাফি হাতে খড়ি একটি বিগিনারদের গাইড | Photography Guide, ফটোগ্রাফি হাতে খড়ি একটি বিগিনারদের গাইড PDF সহ| Photography Guide With PDF

Contents

ফটোগ্রাফি হাতে খড়ি একটি বিগিনারদের গাইড

ক্যামেরা একটা জটিল জিনিষ বটে! আমি আমার প্রথম ডিএসএলআর (DSLR) নিয়ে খুবই হতাশ হচ্ছি। সংগ্রামও করছি। আমার ভিউ-ফাইন্ডারের মাধ্যমে যা দেখছি, তা ঠিক ক্যাপচার করতে পারছি না। কিন্তু হাজার হাজার ট্রায়াল এবং এরর এর মাধ্যমে এখন একটু একটু যেন ধরতে পারছি।
এখন মনে হয় যেন একটু একটু বুঝতে পারছি, এবং কিছু কিছু মোটামুটি ভাল ছবিও তুলতে পারছি বলে আমার ধারনা।
এই পোস্টে, আমি আমার পরীক্ষানিরীক্ষা এবং ভুলভ্রান্তি গুলো থেকে যা শিখেছি, তা আপনাদের সাথে শেয়ার করব।

ক্যামেরাতে আলো প্রবেশ করার তিনটি ধাপ

প্রথম ধাপ
অ্যাপারচার হচ্ছে লেন্স এর ভিতরের গর্তের পরিধি। অ্যাপারচারে কোন পরিবর্তন এই গর্তের আকারকেও পরিবর্তিত করে, ফলে অ্যাপারচার পরিবর্তন করে ক্যামেরাতে কত টুকু আলো প্রবেশ করবে। তা নির্ধারণ করে।
লেন্স ওপেনিং-এর এফ-নাম্বার দ্বারা পরিমিত নিয়ন্ত্রণ। লেন্সের মধ্যে কতটা আলো ঢুকবে তা এই অ্যাপারচার নিয়ন্ত্রণ করে। ডেপথ অফ ফিল্ড ও ডিফ্র্যাকশনের উপরেও অ্যাপারচার প্রভাব বিস্তার করে –এফ-নাম্বার যত বেশি হবে, ওপেনিং যত ছোটো হবে, যত কম আলো ঢুকবে, ডেপথ অফ ফিল্ড তত বাড়বে, এবং ডিফ্র্যাকশন ব্লারও তত বাড়বে। এফ-নাম্বার কর্তৃক বিভাজিত ফোকাল লেন্থ কার্যকর অ্যাপারচার ডায়ামিটার নির্ধারণ করে।
দ্বিতীয় ধাপ
দ্বিতীয় ধাপে আয়নাটা উপরে উঠে যায় এবং শাটার খুলে যায়, এবং রেকর্ড করতে কত খানি আলো সেন্সরে আছে। যেই স্পিডে এটা হয়ে থাকে ডিটারমাইন করে এক্সপোজারের লেনথ এমনকি মোশান ব্লার।
তৃতীয় ধাপ
সেন্সর আলো কে ক্যাপচার করবে এবং আইসো (ISO) সেই আলোকে নিয়ন্ত্রণ করবে। আইসো যত বেশীতে সেট করবেন, সেন্সর তত বেশী সেনসিটিভ হবে, কিন্তু তা ডিজিটাল নয়জ ও ক্যাপচার করবে।

এক্সপোজার (Exposure)

যারা নতুন ফটোগ্রাফি শুরু করছেন, এক্সপোজার তাদের জন্যে একটি ভাল ছবি তোলার চাবি।
এক্সপোজার কিভাবে কাজ করে তা একবার ধরতে পারলে আপনি আপনার ক্যামেরাকে আরও ভাল ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন আরও ভাল ছবি তোলার জন্যে।
অ্যাপারচার, শাটারের গতি (shutter speed), এবং আইসো – এই তিনটি উপাদান একত্র হয়ে এক্সপোজার তৈরি করতে। আপনি শিগ্রী শিখতে পারবেন যে, এই তিনটি উপাদান কেবলমাত্র এক্সপোজার নয়, ডেপথ-অভ-ফিল্ড এবং মোশান বলার এবং ডিজিটাল নয়সে পরিবর্তন ঘটাবে। একবার যখন ধরে ফেলতে পারবেন এই তিনটা জিনিষ কিভাবে কাজ, আপনি ম্যানুয়াল মোডে ছবি তোলা শুরু করতে পারবেন এবং আপনার ক্যামেরাকে আরও ভাল নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
এক্সপোজার ত্রিভুজটি মনে রাখা একটি খুব ভাল উপায় মনে রাখতে যে তিনটি সেটিং কিভাবে আলোর পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে যে কোন দৃশ্যকে ধারন করার সময়। এটা থেকে আপনি সহজে বুঝতে পারবেন যে, এক সেটিং পরিবর্তন করলে অন্য সেটিং এর ও একটি পরিবর্তন প্রয়োজন হবে। তা হচ্ছে যদি আপনি একই আলোতে একই দৃশ্যের ফটোগ্রাফি করে থাকেন।

অ্যাপারচার (Aperture)

এক্সপোজার (Exposure) তিন ধাপে ঘটে, এবং আপারচার দিয়ে শুরু হয়। এটি লেন্সের ভিতরে একটি গর্তের মত থাকে, যার ভেতর দিয়ে আলো প্রবেশ করে। এটি আপনার চোখের পাতার মতো: অ্যাপারচার (aperture) যত বৃহত্তর হবে, আরো আলো প্রবেশ করতে পারবে, এবং যত ছোট হবে, তত কম আলো প্রবেশ করতে পারবে। তবে ব্যাপারটি যত সহজ মনে হচ্ছে অত সহজ নয়। অ্যাপারচার (aperture) যত বাড়বে, f/stop সংখ্যাটি যত কমবে, আরও বেশী আলোকে ক্যামেরাতে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে। কম আলোর ক্ষেত্রে এটা বেশ ভাল, তবে একই সময় মনে রাখতে হবে যে, এটি ডেপথ-অভ-ফিল্ডটিকে অনেক শ্যালও করে তুলবে – যা ল্যান্ডস্কেপের ছবি তোলার ক্ষেত্রে আদর্শ নয়। আপনি যদি f/stop স্কেলটি মনে রাখতে পারেন তবে এক্সপোজার আপনার জন্যে আরও সহজ হয়ে উঠবে।
নিম্নরূপ স্কেল:
f/1.4, f/2, f/2.8, f/4, f/5.6, f/8, f/11, f/16, f/22

শাটার গতি (Shutter Speed)

একবার যখন আলো লেন্স এর অ্যাপারচার (aperture) এর মাধ্যমে প্রবেশ করবে, এবং শাটারে পৌছাবে, তখন আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, কতটুকু আলো আপনি আপনার ক্যামেরার ভেতর প্রবেশ করার অনুমতি দিবেন। সাধারনত, আপনি সেকেন্ডের একটি ছোট ভগ্নাংশ চাইবেন (উদাহরণস্বরূপ 1/250) মশান ব্লার প্রতিরোধ করতে। তবে, বিভিন্ন শাটার গতি (shutter speed) বিভিন্ন পরিস্থিতির জন্যে উপযুক্ত। ক্রীড়া ফটোগ্রাফির জন্য খুব দ্রুত (উদাহরণস্বরূপ 1/4000) থেকে, রাতের ফটোগ্রাফির জন্য খুবই স্লো (যেমন 30 সেকেন্ড)। এটি পুরোপুরি নির্ভর করবে আপনি কি শুট করছেন এবং কতটা আলো ছবি তোলার সময় আছে তার উপর করে। আপনার শাটার স্পিড কিভাবে কাজ করে তা জানা ফটোগ্রাফির জন্যে খুবই জরুরী।

আইসো (ISO)

একবার যখন আলো অ্যাপারচার (aperture) দিয়ে প্রবেশ করবে এবং শাটার এর মাধ্যমে ফিল্টারড হবে, এটি সেন্সরে পৌছায়, যেখানে আমরা আইসো (ISO) সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি। আপনি যখন আইসো (ISO) নম্বরটি বৃদ্ধি করবেন, তখন আপনার এক্সপোজাটিও বাড়বে, তবে একই সাথে চিত্রের গুণমান হ্রাস পাবে। আরো ডিজিটাল নয়জ বা “গ্রেইন” সৃষ্টি হবে আপনার ছবিতে। সুতরাং আপনাকে এক্সপোজার বনাম গ্রেইন, এই অগ্রাধিকার অনুযায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, আমি ছবির গুণমান হ্রাস করব যদি আমি আমার ফটোতে মশান ব্লার প্রতিরোধ করতে চাই। এবং সেটা পোস্টেও ঠিক করার কোনও উপায় নেই (অন্তত এখন পর্যন্ত)।

এক্সপোজার সারাংশ (Exposure Summary)

একবার যখন আপনি অ্যাপপারচার (aperture), শাটার গতি (shutter speed) এবং আইসো ধরতে পারবেন, আপনাকে শিখতে হবে কিভাবে এক্সপোজারের এই উপাদানগুলি একসঙ্গে কাজ কিভাবে করে। ফটোগ্রাফির সমস্ত বেইসিক্স এর জন্য, এক্সপোজার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনার এটি স্পষ্ট হয়ে না থাকে, তবে কম্পসিশন এবং ফ্রেইমিং বিগিনার ফটোগ্রাফারদের জন্যে বিতর্কিত বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। এই পোস্টে আপনি শিখতে পাবেন কিভাবে সেরা ছবিটি তোলার জন্যে অ্যাপারচার (aperture), শাটার গতি (shutter speed) এবং আইসোকে অগ্রাধিকার দিবেন, প্রতিবার!

আপনার ক্যামেরাকে বোঝা (Understanding your camera)

হিসটোগ্রাম (Histograms)

একটি ছবি তোলার পর হিস্টোগ্রাম আপনাকে এক্সপোজারের একটি গাণিতিক পর্যালোচনা দেখায়। এটি অপরিহার্যভাবে আপনাকে দেখিয়ে থাকে একটি ফটো কতটা সমানভাবে এক্সপোসড (exposed)। এলসিডি স্ক্রিনগুলি খুব বেশী ভাল নয় আপনাকে এই তথ্য দিতে তাদের ছবির ডিসপ্লে দ্বারা, কারণ তারা প্রভাবিত হয়ে থাকে আপনার পরিবেশগত আলোর দ্বারা এবং স্ক্রিনের নিজস্ব উজ্জ্বলতার দ্বারা। এই কারণে হিস্টোগ্রামটি একটি শক্তিশালী হাতিয়ার যা প্রথমদিকে সঠিকভাবে ছবি তোলার জন্যে ব্যবহার করা যায়।

বিভিন্ন শুটিং এর মোড (Shooting Modes)

অ্যাপারচার প্রাওরিটি (Aperture Priority), শাটার প্রাওরিটি (Shutter Priority), কিংবা ম্যানুয়াল মোড (Manual Mode)। আরও আছে আটো মোড এবং প্রোগ্রাম মোড।
কিভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন কোনটা ছবি তোলার সময় ব্যাবহার করবেন? কোন কন্ডিশানে কোন মোডটি ব্যবহার করা উচিৎ সে সম্পর্কে অনেক ভুল ধারণা রয়েছে। তার উপরে ম্যানুয়াল মোড ব্যবহার না করার প্রতি একটা বায়াস ও আছে। যখন আপনি সঠিকভাবে প্রতিটি মোড কি করে তা বুঝবেন, তখন কোন পরিস্থিতির জন্য কোন মোডটি উপযুক্ত আপনার কাছে আরও সহজতর হয়ে উঠবে।
দক্ষ ফটোগ্রাফাররা খুব কম এ পোরট্রেইট বা ল্যান্ডস্কেপ ব্যাবহার করে ছবি তুলে থাকেন।
আটো মোডে ক্যামেরা আপনার জন্যে সব কিছু অটোমেটিকালি নির্বাচন করে দিবে। কিন্তু এই মোড এর অনেক সমস্যা আছে। দেখবেন যে আপনি যখন ফ্ল্যাশ চাচ্ছেন না, তখনও দেখবেন ফ্ল্যাশ অন হয়ে গিয়েছে। কিছুই আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকবে না।
এখন প্রোগ্রাম মোড নিয়ে আলোচনা করি। এই মোডেও কিন্তু সব কিছু অটোমেটিক, এই মোডেও ক্যামেরা আপনার জন্যে অনেক কিছু করে দিবে, তাও আটো মোড এর থেকে কিছু কিছু জিনিষের উপর আপনার নিয়ন্ত্রণ বেশী থাকবে।

অ্যাপারচার প্রাওরিটি (Aperture Priority)

যখন আপনি কম আলোতে ছবি তুলবেন, তখন আপনাকে সর্বদা আপনার এপারচার (aperture) সম্প্রসারিত করতে হবে যেন লেন্সে যথেষ্ট আলো প্রবেশ করতে পারে। তবে এটির একটি বড় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে: শ্যালো ডেপথ-অফ-ফিল্ড (shallow depth of field)। এটি খুব সৃজনশীলভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে (প্রায়শই অতিরিক্ত) তবে তা সব সময় ভাল নয়। ধরুন, ল্যান্ডস্কেপের ক্ষেত্রে, আপনি একটি সংকোচকারী অ্যাপারচার (aperture) ব্যবহার করতে চাইবেন যেন পুরো দৃশ্যটি ফোকাসে থাকে। ফটোগ্রাফির মূল বিষয়গুলি কাভার করতে গেলে, ডেপথ-অফ-ফিল্ড (depth of field) খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
উপরের ছবিতে দেখতে পারছেন যে বাম দিকের অ্যাপারচারটা সব চেয়ে বেশী খোলা, তাই আলোও সব চেয়ে বেশী প্রবেশ করবে। ডান দিকে আপেরচার সব চেয়ে কম খোলা, তাই এই ক্ষেত্রে কম আলো প্রবেশ করবে।
অ্যাপারচার এর সংখ্যা টি কে বলা হয়ে থাকে এফ-স্টপ (f-stop). আগেও বলেছি, এটি একটা অদ্ভুত নিয়ম কারণ, f-stop এর কম ভ্যালুতে অ্যাপারচার সবচেয়ে বেশী খুলে থাকে, এবং অ্যাপারচারের ভ্যালু যত বাড়ানো হয়, অ্যাপারচার তত ছোট হতে থাকে। বা তত কম খোলা হয়ে থাকে।
এখন অ্যাপারচার আমরা কেন বড় বা ছোট করতে চাইব? যেমনটি বলেছিলাম, ডেপথ-অভ-ফিল্ড বা ব্যাক গ্রাউন্ড ব্লার বলে একটা জিনিষ আছে।

উপরের ছবিটির একদম বাম দিকে দেখুন এফ-স্টপ এর ভ্যালু এক দশমিক আট (1.8) এবং একদম ডান দিকে বাইশ (22)।

প্রথম ছবিতে এফ-স্টপ এর ভ্যালু সবচেয়ে কম, তাই ব্যক্তিটি কে অনেক স্পস্ট দেখালেও তার পেছনে সব কিছু ঝাপসা। অ্যাপারচার বাড়িয়ে দেয়ার পরে ব্যাকগ্রাউন্ড মটামটি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।

এখন আপনার উদ্দেশ্য যদি হয়ে থাকে ব্যক্তিটা কে স্পষ্ট দেখিয়ে আর সব কিছু ঝাপসা দেখানো, তাহলে আপনি আপনার অ্যাপারচার কমিয়ে দিবেন।
লেন্স এর উপর নির্ভর করবে অ্যাপারচার কত কমানো যায়। যেমন আমার লেন্স এ কিন্তু আমি অ্যাপারচার তিন দশমিক পাঁচ এর নিচে কমাতে পারি না। অ্যাপারচার যত কমাতে পারবেন, ছবিতে আপনি বেশী শ্যালো ডেপথ-অভ-ফিল্ড আনতে পারবেন, মানে ফোকাস এর বাহিরে সব কিছু তত বেশী ঝাপসা করতে পারবেন।

শাটার প্রাওরিটি মোড (Shutter Priority Mode)

অ্যাপারচার মোডে অ্যাপারচার সেট করবেন আপনি, এবং সেই অনুযায়ী শাটার নিয়ন্ত্রণ করবে আপনার ক্যামেরা।  এবং শাটার মোডে শাটার সেট করবেন আপনি।

শাটার কে যদি আমি ক্যামেরার চোখ মনে করি, তাহলে শাটার এর ভ্যালু অনুযায়ী ক্যামেরার চোখ ততক্ষন খোলা থাকবে। শাটার যত বেশীক্ষণ খোলা থাকবে আলো তত বেশী প্রবেশ করবে, এবং শাটার যত বেশী কম সময়ের জন্যে খোলা থাকবে, আলো তত কম প্রবেশ করবে।

তাই কম আলোতে আপনি চাইবেন শাটার বেশী সময়র জন্যে খোলা থাকুক এবং বেশী আলোতে চেষ্টা করবেন শাটার কম সময়ের জন্যে খোলা থাকুক।

কম আলতে পোরট্রেইট তোলার জন্যে আপনি শাটার নির্ধারণ করে রাখতে পারেন ১/৩০ এ এবং স্বাভাবিক আলোতে পোরট্রেইট তুলতে চাইলে আপনি শাটার নির্বাচন করে রাখতে পারেন ১/৬০ এ।
কিন্তু আপনি ধরুন চলন্ত কিছু কে ক্যাপচার করতে চাচ্ছেন, যেমন একটা পাথি উড়ছে, তার ডানা গুলো ফ্রিজ করতে চান, তাহলে আপনার শাটার স্পিডটা বাড়িয়ে দিতে হবে, মানে সংখ্যা কমিয়ে দিতে হবে, যেমন ১/১৬০০, ১/২৫০০ পর্যন্ত আপনি যেতে পারেন।
নীচের ছবি তিনটি লক্ষ্য করে দেখুন।

একটি মেয়ে মেরি-গো-রাউন্ডে ঘুরছে। একদম বাম দিকে শাটার স্পিড এর ভ্যালু সবচেয়ে বেশী, এবং একদম ডান দিকে সব চেয়ে কম। সেই কারনে, একদম বাম দিকের ছবিটিতে বোঝা যাচ্ছে যে বাচ্চাটি ঘুরছে, এবং ডান দিকের ছবিটি তে বোঝাই যাচ্ছে না যে বাচ্চাটি ঘুরছে। এখন আপনি আপনার ছবির মাধ্যমে কি গল্প বলতে চান, সেটার উপর নির্ভর করবে আপনি শাটার স্পিড কততে সেট করবেন।

ম্যানুয়াল মোড (Manual Mode)

ম্যানুয়াল মোডে আপনি শাটার এবং অ্যাপারচার, উভয়ই নিয়েন্ত্রন করতে পারবেন।

ফোকাসিং মোডস (Focusing modes)

ডিজিটাল ফটোগ্রাফি নতুনদের জন্য বিভ্রান্তিকর হতে পারে। কারণ আপনাকে এটাও শিখতে হবে আপনার ক্যামেরা আলোর দিতে কিভাবে তাকায়।
ফোকাসিং মোডগুলি আছে আপনার ক্যামেরাটিকে বলে দেয়ার জন্যে কিভাবে যে কোন দৃশ্যকে দেখতে হবে।
AF-A: অটোমেটিক (ক্যামেরা আপনার জন্যে চিন্তা করবে)
AF-S: স্টিল সাবজেক্ট এর জন্যে
AF-C: কন্টিনুয়াস চলন্ত সাবজেক্টের জন্যে (Continuous, for moving objects)
যদিও ক্যামেরা আপনার জন্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয় ছবির কোন অংশে ফোকাস করতে হবে, তাও ক্যামেরার থেকে আপনার বুদ্ধি বেশী, সুতরাং প্রায় ক্ষেত্রে আপনাকে আপনার ক্যামেরাকে বলে দিতে হবে ছবির কোন অংশে ফোকাস করতে হবে।হয়তো আপনি ফোকাস করতে চান একটা পাখির উপর, কিন্তু ক্যামেরা ফোকাস করে আছে পাখি গাছের যেই ডালের উপর বসে আছে সেটার উপর। বা একটা গ্রুপ ছবিতে আপনি যার উপর ফোকাস করতে চাচ্ছেন, ক্যামেরা ফোকাস করে আছে কোন ভিন্ন ব্যক্তির উপর।

পরবর্তী ব্লগে আর বিস্তারিত আলোচনা করা হবে কিভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কখন, কোন পরিস্থিতিতে, কিসের ছবি তোলার সময় আপনি কোন মোডটি বাছাই করবেন।

ওয়াইট ব্যালেন্স (White Balance)

ওয়াইট ব্যালেন্স এমন একটি জিনিষ যা আমি আরও আগে শিখতে পারলে ভাল হত। আমি এখন আমার তোলা কিছু ছবির দিকে ফিরে তাকাই এবং চিন্তা করি, কি আশ্চর্য, কি চিন্তা করছিলাম আমি! ওয়াইট ব্যালেন্স (White Balance) পুরো ছবির রঙের কাস্ট পরিবর্তন করে থাকে। আপনার ছবি নীল বা কমলা বলে মনে হচ্ছে কিনা, তা নির্ধারণ করতে পারে ওয়াইট ব্যালেন্স। অটো ওয়াইট ব্যালেন্স (White Balance) বিশেষ ভাল কাজ করে থাকে না, বিশেষ করে টংস্টেন আলোর ক্ষেত্রে। যত তাড়াতাড়ি আপনি ফটোগ্রাফির এই মৌলিক বিষয়টি সম্পর্কে শিখবেন, আপনার ফটোগুলি আরো ভাল দেখাবে।

গ্লোরিয়া জিনস কফি হাউজের আলো এত কমলা হয়ে থাকে যে, সেখানে একটি কফি কাপের ছবি তোলার পর তা এমন এসেছিল

 

 

ওয়াইট ব্যালেন্স ঠিক করার পর, বা কমলা রং এর যেই কাস্ট আছে ছবিটিতে, তা সরানোর পর, ছবিটি স্বাভাবিক আলো বা নেচারেল লাইটে যেমন দেখাতো, তেমন দেখাচ্ছে-

ফোকাসের দৈর্ঘ্য (Focal Length)

আপনি কি কখনও ভেবেছেন আপনার লেন্সের ‘mm’ টি আসলে কি বোঝায়? অথবা কেন মানুষ পোর্ট্রেট এর জন্য দীর্ঘ ফোকাল লেনথ ব্যবহার করে থাকে? ফোকাস দৈর্ঘ্য কেবল মাত্র ‘জুম’ এর থেকে বেশি প্রভাব ফেলে থাকে – এটি দৃষ্টিকোন (perspective) এর উপরেও প্রভাব ফেলে থাকে। বিভিন্ন ফোকাস লেনথ যা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা উচিৎ, সেটি এবং তার সম্ভাব্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পরবর্তী পোস্টে কাভার করব।

ক্রপ ফ্যাক্টর (Crop Factor)

আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন না যে যতক্ষন পর্যন্ত না আপনার ক্যামেরার পেছনে প্রায় ৳১৫০০০০ এর অধিক খরচ করবেন, আপনাকে খুব সম্ভবত ক্রপ সেন্সরে ছবি শুট করতে হবে। এর অর্থ হচ্ছে, আপনার সেন্সর পেশাদার SLR ক্যামেরাগুলির চেয়ে অনেক ছোট, এবং আপনার ছবিকে ক্রপ করে দিচ্ছে। আপনার ছবির উপর ক্রপ ফ্যাক্টরের প্রভাবের একটা পরিসীমা(রেইঞ্জ) আছে। এটি আরও সংকীর্ণ দেখার কোণ (এঙ্গেল) তৈরি করে, এবং আপনার ভবিষ্যতে কেনা লেন্স এর উপর প্রভাব ফেলবে। যারা বিগিনার ফটোগ্রাফার, আপনাদের আগে গবেষণা করা উচিৎ কোন লেন্সগুলি আপনাদের ফটোগ্রাফির জন্যে উপযুক্ত হবে।

পোলারাইজিং ফিল্টার (Polarizing Filters)

পোলারাইজিং ফিল্টার শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট দিক থেকে লেন্সের মধ্যে আলো প্রবেশ করার অনুমতি দেয়। এটি সাহায্য করে নন-মেটালিক বস্তু থেকে গ্লেয়ার এবং প্রতিচ্ছবি (গ্লেয়ার এবং রিফ্লেকশন) অপসারণ, অর্থাৎ রিমুভ করতে। পানি এবং গ্লাস সবচেয়ে বেশী প্রভাবিত হয়ে থাকে, পাশাপাশি আকাশ থেকে হেইজ। এই রিফ্লেকশন বাদ দিতে পারলে আরো স্বাভাবিকভাবেই ছবির স্বাভাবিক রংটি দেখা যাবে। এটির সাহায্যে ছবি যে শুধুমাত্র ভাল দেখায় যে তা নয়, তবে এটি পোস্ট-প্রোসেসিংও পুনরাবৃত্তি করা যাবে না, সে কারনে এটি বোঝা জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

পেশাগতভাবে শার্প ছবি কিভাবে তুলবেন

ফটোগ্রাফি শুরু করার জন্য, আমি পেশাগতভাবে শার্প ছবি তোলার ১০ ধাপের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আপনাকে নিয়ে যাব। এটা কাভার করবে কিভাবে সঠিক অ্যাপারচার এবং শাটার গতি (shutter speed) নির্বাচন করা থেকে RAW ছবি কিভাবে তুলতে হয়। খুব সহজেই আপনি একটা ভুল করে ফেলতে পারেন যেটার কারনে আপনার ছবি কম শার্প আসবে।

দা নিজটি ফিফটি (The Nifty Fifty)

নিজটি ফিফটি সম্পর্কে আর কি বলতে পারি? পছন্দ না করার কি আছে? আপনারা যারা বিগিনার ফটোগ্রাফার, আমি যখন নিফটি-ফিফটি নিয়ে কথা বলব, আমি রেফার করছি 50mm f/1.8 প্রাইম লেন্স (prime lens) এর দিকে। এটি খুব সস্তায় প্রায় ডিজিটাল SLRs এর জন্যে কিনতে পাওয়া যাবে। এটা একটা ভাল ইন্ট্রো আরও ভাল মানের লেন্স ক্রয় করার জন্যে। অ্যাপারচার (Aperture) গ্রিপ করার জন্যেও একটা মারাত্তক উপায়।

কম্পসিশন (Composition)

এক্সপোজার (exposure) বোঝাটা জরুরী কিন্তু, যদি আপনি মউলিক কম্পসিশন (composition) এর উপর অভিজ্ঞতা না আনতে পারেন, ভাল ফটো তুলতে আপনাকে অনেক সংগ্রাম করতে হবে। তার মানে এই নয় যে কম্পসিশনের প্রত্যেকটি রুল মেনে চলতে হবে। কিন্তু এই রুল গুলো সম্পর্কে জেনে রাখা ভাল, যেন তারা আপনাকে আরও ভাল ছবি তুলতে গাইড করতে পারে।

রুল অভ থার্ডস (rule of thirds)

এটা সম্ভবত প্রথম রুল যাকিনা কম্পসিশন এর ক্ষেত্রে যে কোন বিগিনার ফটোগ্রাফার এর জানতে হয় এবং খুব ভাল কারণবসত: এটা বোঝা খুব সহজ। এটার মূল ভিত্তি হচ্ছে যে, আপনার ক্যামেরার ফ্রেইমকে তিন ভাগে ভাগ করবেন এবং মেইন বস্তু গুলোকে সে সব লাইনে স্থান দেবেন; তাহলে আপনার কম্পসিশন (composition) বেশী ভাল কাজ করবে। এটা একটা ভাল টুল যা প্রতিবার কাজ করবে। এবং, আপনি যদি এখনও ফটোগ্রাফি সম্পর্কে এখনও বেশী না জেনে থাকেন, আপনার ফটো গুলোকে আরও নাটকীয়ভাবে উন্নত করার সবচেয়ে ভাল উপায় হচ্ছে এই রুলটি ফলো করা। আপনার ছবিকে আপনি আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারবেন।

ভিজ্যুয়াল ওয়েইট (Visual Weight)

ভিজ্যুয়াল ওয়েইট বুঝতে পারলে, আপনি বোঝা শুরু করবেন কিভাবে মানুষ একটা ফটোকে দেখে এবং আপনার ছবির বস্তু গুলোকে এমন ভাবে ফ্রেইমে বসাতে শিখবেন যেন মানুষের চোখ চলে যায় সেই বস্তুর দিকে যেখানে আপনি চান তার দৃষ্টি যাক। এটি যত না একটি টুল বা রুল, কিন্তু এটা একটি বোঝার ক্ষমতা ও।

ত্রিভুজসমুহ (Triangles)

ফটগ্রাফিতে আকার খুব গুরুত্বপূর্ণ। ত্রিভুজ আমরা প্রায় সব কিছুতেই দেখি। যেদিকেই তাকাই, কোন না কোন দিক থেকে। এটা শুধু আলাদা করতে পারার একটা ক্ষমতা থাকতে হয়, এবং জানা থাকতে হয় যে ত্রিভুজ দিয়ে কি করতে হবে। ত্রিভুজ কম্পসিশনের টুল (সরঞ্জাম) হিসেবে ভাল কাজ করে। এটা সবচেয়ে সহজ এবং সবচেয়ে মৌলিক ফটোগ্রাফির কম্পজিশনের জন্যে। তারা বিভিন্ন কমপজিশনের কৌশল কেও একত্র করারও একটা চমৎকার উপায়, যেমন লাইন এবং পথ ঘাট মিশ্রন করে, ফটোগ্রাফির আরও ইন্টারেস্টিং অংশ তৈরি করার জন্যে। ত্রিভুজ ব্যাবহার করে আপনি একটা ফটোকে আরও স্টেইবল বা আন্সটেইবল ও করতে পারেন।

ত্রিভুজকে কিভাবে ব্যাবহার করা যায় আপনার ছবিকে আরও আকর্ষণীয় করার জন্যে, সেটার উপর এই লেখাটি আমার পছন্দ-

5 ways to use triangles in photography composition

আই-লাইনস (আই-লাইন)

আপনি যদি মানুষের পোরট্রেইট তুলেন, আপনি আই লাইন দিয়ে ছবি তুলবেন। আই লাইনের ভূমিকা হচ্ছে আমরা কিভাবে একটি ছবিকে দেখি। এটি বোঝাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আই-লাইন এর ক্ষমতা আছে আমাদের মনোযোগকে ফোকাস করতে ফটোর একটা নির্দিষ্ট অংশের দিকে। যদিও তারা ফিসিকাল লাইন নয়, তাদের ব্যাবহার করা যাবে বিভিন্ন এলিমেন্ট তৈরি করতে।

ভারসাম্য অথবা ব্যালেন্স (balance)

একটা ফটোতে ব্যালেন্স (balance) প্রভাব ফেলে আমরা একটা ছবি দেখলে কেমন অনুভব করি সেটার উপর।. একটা ব্যালেন্স ছাড়া ফটো আমাদের অস্বস্তি বোধ করাতে পারে, যেখানে একটা সমানুপাতিক ফটো আমাদের আরও স্বচ্ছন্দবোধ করাতে পারে। যদিও এটা আসলে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ নয় ফটো সমানুপাতিক নাকি নয়, তবে আপনাকে বুঝতে হবে কেন আপনি সমানুপাতিক বা অসমানুপাতিক ছবি নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এবং আপনার ফটোর উপর সেটা কি প্রভাব ফেলতে পারে। তবে, এটিও তেমনই একটি জিনিষ যা সম্পর্কে আপনি যত বেশী শিখবেন, আপনার কাঙ্ক্ষিত ইফেক্ট পাওয়া তত সহজ হবে।
প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার হতে এই বইটি পড়ুন –

Leave a Comment