দয়ানন্দ সরস্বতী (Dayananda Saraswati) ফেব্রুয়ারি একজন গুরুত্বপূর্ণ হিন্দু ধর্মগুরু ছিলেন এবং সমাজ সংস্কারক এবং আর্যসমাজের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। ১৮২৪ সালে ১২ পশ্চিম ভারতের কাথিয়াওয়াড়ের মোরভি শহরে একটি সভ্রান্ত হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার গার্হস্থ্য আশ্রমের নাম মূলশংকর।তার আসল নাম ছিল মূলশঙ্কর তিওয়ারী এবং তাঁর পিতা কর্ষণজী লাল তিওয়ারী এবং মাতা যশোদাবাইের সঙ্গেই থাকতেন তিনি । তিনি প্রাথমিক শিক্ষা তার পিতার কাছ থেকেই লাভ করেন । ইংরেজি শিক্ষার সুযোগ না পাওয়ায় প্রথম থেকেই তিনি সংস্কৃতশাস্ত্র উত্তমরূপে আয়ত্ত্ব এবং সমগ্র যজুবেদ ও আংশিকভাবে অপর তিন বেদ, ব্যাকরণ, তর্ক ও দর্শনশাস্ত্র, কাব্য, অলংকার, স্মৃতি প্রভৃতিতে যথেষ্ট ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন । ১৮৮০ খ্রিষ্টাব্দে বিখ্যাত কাশী শাস্ত্রে তিনি তৎকালীন পন্ডিতবর্গকে পরাজিত করে বিশেষ খ্যাতি লাভ করেছিলেন।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
নাম ((Name)) | দয়ানন্দ সরস্বতী |
ইংলিশ নাম (English Name) | Dayananda Saraswati |
ছদ্মনাম (Nick Name) | |
জন্ম (Birth) | ১২ ফেব্রুয়ারি ১৮২৪ |
জন্ম স্থান (Birth Place) | পশ্চিম ভারতের কাথিয়াওয়াড়ের মোরভি শহরে এক ধনাঢ্য নিষ্ঠাবান সামবেদী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। |
বাবার নাম (Father Name) | কর্ষণজী লাল তিওয়ারী |
মায়ের নাম (Mother Name) | যশোদাবাই |
ভাষা | গুজরাটি |
পড়াশোনা (Educatriuon) | |
কর্মজীবন (Occupations) | ধর্মগুরু, সমাজ সংস্কারক এবং আর্যসমাজের প্রতিষ্ঠাতা |
স্ত্রী / স্বামী (Wife/ Husband) | |
সন্তান (Childrens) | |
ধর্ম (Religion) | হিন্দু |
জাতীয়তা (Nationality) | ব্রিটিশ ভারতীয় |
মৃত্যু (Death) | ৩০ অক্টোবর ১৮৮৩ ( আজমির, ব্রিটিশ ভারত (অধুনা রাজস্থান, ভারত)) |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি | |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার (Prize) | |
জীবন কাল / বয়স (Age) | বয়স ৫৯ |
আসল নাম | মূলশঙ্কর তিওয়ারী |
তার ছোট বোন ও কাকা কলেরায় মারা যান। তখন তিনি মৃত্যুচিন্তা এবং অমরত্ব লাভের উপায় অনুসন্ধান করতে লাগলেন যা মূলশঙ্করকে বৈরাগ্যের পথে পরিচালিত করেছিল। তার এই অবস্থা দেখে তার বাবা মা চিন্তিত হন এবং তাকে বিয়ে দেওয়ার চিন্তা করে, কিন্তু বিয়ে তার জন্য নয় এটি ভেবে তিনি ১৮৪৬ সালে ২২ বছর বয়েসে বিয়ের দিন তিনি বাড়ি ত্যাগ করেন ।
১৮৪৬ থেকে ১৮৬০ সাল পর্যন্ত সত্যেন্বাষণ ও অমৃতের সন্ধানে ১৫ বছর নর্মদা নদীর অরণ্য সঙ্কুল তীরভূমি হতে আরম্ভ করে হিমালয়ের বরফাচ্ছন্ন শিখর দেশ পর্যন্ত বিভিন্ন মঠে, মন্দিরে সাধুসঙ্গে ও যোগসাধনায় অতিবাহিত করেন। মথুরায় তিনি বিরজানন্দ দন্দীশা নামে একজন গুরুর শিষ্য হন। তিনি তাহার কাছে ছয়বছর অধ্যয়ন শিখেন ।
বিরজানন্দের কাছে শিক্ষা গ্রহণের পর তিনি বৈদিক মত প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ান। ১৮৬৯ সালে ১৭ই নভেম্বর বারাণসীর কাশীতে অবস্থান কালে ২৭ জন বিদ্যান এবং ১২ জন বিশেষজ্ঞ পণ্ডিতের সাথে তার বিতর্কের আয়োজন হয়। বিতর্কে ৫০,০০০ এরও বেশি লোকের উপস্থিতি ছিল। গঙ্গা নদীতে স্নান ও বার্ষিকীতে পুরোহিতদের খাওয়ানোর মতো আচার-অনুষ্ঠানগুলোকে উৎসাহিত করত, যা দয়ানন্দ কুসংস্কার বা স্ব-পরিচর্যা প্রথা বলে প্রতিবাদ করেছিলেন।তাদের ভস্মলেপন, রুদ্রাক্ষ, তিলক ধারণ করাকে অপ্রয়েজনীয় মনে করতেন। তার মতে সাধনার জন্য বাহ্যিক চিহ্ন ধারণ করার প্রয়োজন নেই। ইহা পশুবৎ মানুষের কর্ম।তিনি বৈদিক বিদ্যালয়ের গুরুত্ব উপলব্ধি করেন এবং বিভিন্ন স্থানে বৈদিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন।বৈদিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা ও বৈদিক জীবনধারা অনুসরণ করানো ছিল তার লক্ষ । তিনি নারীদের সমান অধিকার ও সম্মানের কথা বলেন। লিঙ্গ, বর্ণ নির্বিশেষে সকল শিশুর বেদ শিক্ষার পক্ষে মত দিয়েছেন। বলিপ্রথা, বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলেছেন।
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনকে প্রভাবিত করার জন্য দয়ানন্দ সরস্বতী সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। তাঁর মতামত এবং লেখা বিভিন্ন লেখক ব্যবহার করেছেন। শ্যামজী কৃষ্ণ বর্মা সহ সুভাষ চন্দ্র বসু ; লালা লাজপত রায় ; ম্যাডাম কামা ; বিনায়ক দামোদর সাভারকর ; লালা হরদয়াল ; মদন লাল ধিংরা ; রাম প্রসাদ বিসমিল ; মহাদেব গোবিন্দ রণাদে ; স্বামী শ্রদ্ধানন্দ ; এস সত্যমূর্তি ; পণ্ডিত লেখ রাম ; মহাত্মা হংসরাজ ; এবং অন্যদের প্রভাবিত করেছিলেন।